প্রকাশিত: Sun, Jul 9, 2023 3:24 PM
আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 7:34 AM

লেখালেখির হে মহান সাধক, আপনাকে প্রণাম, অবনত মস্তকে কুর্ণিশ

স্বকৃত নোমান : আপনি যত বড় লেখকই হোন না কেন, অভিমান করে আজ ঘোষণা দিন যে, আপনি আর লেখালেখি করবেন না। অবসরে চলে যাচ্ছেন। ফেসবুকে কিছু মানুষ আপনাকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার অনুরোধ করবে, আকুতি-মিনতি জানাবে। কিন্তু ক্রিকেটার তামিম ইকবালের মতো আপনাকে ডেকে নেবেন না কোনো এমপি, কোনো মন্ত্রী কিংবা প্রধানমন্ত্রী। মাশরাফির মতো কোনো লেখক বড় ভাই ফোন করে আপনাকে বলবেন না, ‘চলো ভাই, পিএম-এর কাছে চলো। তিনি তোমায় ডেকেছেন’। কারণ আপনি লেখালেখি বন্ধ করে দিলে জাতির কোনো ক্ষতি হবে না, সমাজের কোনো ক্ষতি হবে না, অর্থনীতির কোনো ক্ষতি হবে না, রাষ্ট্রেরও কিছু যাবে-আসবে না। বুঝতে পারছেন তো আপনি কতটা তুচ্ছ, কতটা নগণ্য? তবু আপনি লেখেন। সকল প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিকে এক পাশে সরিয়ে, তুড়ি মেরে উড়িয়ে আপনি লিখে যান। লেখার টেবিলে বসে থাকতে থাকতে আপনার কোমরে ব্যথা হয়ে যায়, লেখা নিয়ে ভাবতে ভাবতে আপনার চোখ থেকে ঘুম হারিয়ে যায়। 

লেখার জন্য আপনি হয়ে পড়েন এক অসামাজিক প্রাণী। কেন, কেন সর্বস্ব বিসর্জন দিয়ে হলেও আপনি লেখেন? কারণটি জীবনানন্দ দাশ বলেছেন তাঁর কবিতায় : অর্থ নয়, কীর্তি নয়, সচ্ছলতা নয় আরও-এক বিপন্ন বিস্ময় আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে খেলা করে আমাদের ক্লান্ত করে। ক্লান্ত ক্লান্ত করে- সেই বিপন্ন বিস্ময় থেকেই আপনি লেখক। সেই বিস্ময়ের ক্লান্তি দূর করার জন্যই আপনি লেখেন। একটি কবিতা লিখে উঠতে পারলে, একটি গল্প কিংবা একটি উপন্যাস লেখা শেষ করতে পারলে আপনার মনে হয়, এই মানবজন্ম সার্থক, বেঁচে থাকা সার্থক। অতএব, লেখালেখির হে মহান সাধক, আপনাকে প্রণাম, অবনত মস্তকে কুর্ণিশ। লেখক: কথাসাহিত্যিক